ছাএ জীবনে ইন্টারনেট থেকে আয় করা যায় যেভাবে

বর্তমানে সকল ছাএ-ছাএীরা পড়াশোনা করার পাশাপাশি কিছু একটা করে তাদের হাত খরচ বা পকেট খরচ চালাতে চায়। তবে, অনেক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছাএ-ছাএীরা “অনলাইন থেকে আয়” করছে খুব ভালো পরিমানে। আবার এদের মধ্যে অনেকে চেষ্টা করছে ছাএ জীবনে কিভাবে “অনলাইনে ইনকাম” করা যায়। আপনারা সবাই জানেন বর্তমান যুগ টেকনোলজির যুগ। এই সময়ে আপনি ঘরে বসে মাএ ১-২ ঘন্টা কাজ করে মাসে ২৫০০০ থেকে ৩০০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন খুব সহজে। (অনলাইন ইনকাম, online income, online earning)

Student earning

বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের সাথে বলবো ছাএ জীবনে “ইন্টারনেট থেকে আয়” করা যায় এমন ৫ সাইট সম্পর্কে। যেগুলো থেকে সারা বিশ্বের মানুষরা লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছে প্রতিমাসে। চাইলে আপনি ও আয় করতে পারেন। আমি যে সাইটগুলো সম্পর্কে আজকে আপনাদের সাথে বলবো সেগুলো সত্তি অনেক জনপ্রিয়। আপনারা মনোযোগ দিয়ে আমার আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়বেন।

তাহালে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক ছাএ জীবনে কিভাবে অনলাইনে আয় (online income) করা যায়।

ছাএ-ছাএীদের জন্য অনলাইনে আয় করার জনপ্রিয় ৫ টি পদ্ধতি

(১) ব্লগিং করে অনলাইনে আয় করুন

ছাএ জীবনে আয় করার সব চেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো ব্লগিং করে অনলাইনে আয় করা। কারণ ব্লগিং করে আপনারা খুব সহজে আনলিমিটেড ইনকাম করতে পারবেন। আর এই রকম আয় করার সুুযোগ দিবে শুধুমাত্র ব্লগিং করার মাধ্যমে। যারা জানেন না ব্লগিং কি তাদের জন্য একটু বলি। ব্লগিং হলো মূলত একটি ওয়েবসাইট। যেখানে আপনি বিভিন্ন বিষয়ে লিখতে পারবেন। এবং সেখান থেকে আপনি ইনকাম করতে পারবেন।

ব্লগিং করতে কি কি লাগবে

আপনি যদি প্রথমে ব্লগিং করে টাকা আয় করতে চান তাহালে যে সকল জিনিস গুলো লাগবে সেগুলো হলোঃ

(১) একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার / ল্যাপটপ।

(২) ইন্টারনেট কানেকশন।

(৩) ব্লগিং সম্পর্কে একটু ধারণা।

কি কি কাজ করত হবে ব্লগিং করতে হলে

ব্লগি শুরু করার জন্য সর্বপ্রথমে আপনাকে একটি নিজের পছন্দমত ডোমেন রেজিস্টেশন করতে হবে। তারপরে একটি হোস্টিং কিনতে হবে। তবে আপনি যদি ব্লগার দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করেন তাহালে হোস্টিং কেনার দরকার নেই। কারণ ব্লগার সব সময় ফ্রি হোস্টিং দেয়। তারপরে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। যদি আপনি ব্লগার দিয়ে ওয়েবসাই বানাকে চান তাহালে কোনো টাকা খচর হবে না। আর যদি ওয়ের্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট বানাতে চান তাহালে কিছু টাকা খরচ হবে।

ব্লগিং করে কিভাবে ইনকাম করা যায়

ওয়েবসাইট তৈরি করার পরে আপনি ভিজিটরদের চাহিদা মতো আর্টিকেল ওয়েবসাইটে পাবলিশ করবেন। তারপরে ধীরে ধীরে আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর্সরা আসবে। আর তখন আপনি ইনকাম করতে পারবেন। আমি নিজে একজন ব্লগার। আমি ব্লগিং করে মাসে ৩০০০০ টাকার বেশি আয় করি। আমার সাইটে যে গুগলের যে বিঙপন গুলো দেখতে পাচ্ছেন সেগুলো থেকে মূলত আমার ইনকাম হয়। আমি গুগল এডসেন্স থেকে আয় করি। আমি নিচে ব্লগিং করে আয় করার জনপ্রিয় কয়েকটি মাধ্যম দিয়ে দিচ্ছি।

ব্লগিং করে আয় করার মাধ্যম

  • (১) গুগল এডসেন্স
  • (২) এফিলিয়েট মার্কেটিং
  • (৩) ই-কমার্স
  • (৪) নিজের বা অন্যদের প্রোডাক্ট সেল
  • (৫) স্পন্সার অ্যাড


(২) ইউটিউব থেকে আয়

ছাএ ছাএীদের অনলাইনে আয় করার জন্য দ্বিতীয় নংবারে যে বিষয়টি রয়েছে সেটার নাম হলো ইউটিউব (YouTube). একজন ছাএ চাইলে ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলে সেখানে ভিডিও পাবলিশ করে প্রতিমাসে ভালো পরিমানে আয় করতে পারে। মনে রাখবেন ইউটিউব থেকে অনলাইনে ইনকাম করার জন্য আপনাকে বাহিরে যাওয়া লাগবে না। আপনি নিজের ঘরে বসে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারেন।

ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার জন্য কি কি দরকার

ইউটিউব থেকে টাকা আয় জন্য আপনারকে বেশ কিছু জিনিসের দরকার হবে। আমি নিচে সেগুলো উল্লেখ করে দিচ্ছি। যথা-

(১) একটি কম্পিউটার / ল্যাপটপ / স্মার্টফোন

(২) ইন্টারনেট কানেকশন

(৩) ক্যামেরা বা মোবাইলের ক্যামেরা

(৪) ভিডিও এডিটিং করার একটি ভালো মানের সফটওয়্যার। আপনি মোবাইলের সফটওয়্যার দিয়ে ও সুন্দর ভাবে ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন।

ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার জন্য কি কি কাজ করতে হবে

ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার জন্য আপনাকে বেশ কিছু কাজ করতে হবে। আমি নিচে সেই কাজ গুলো উল্লেখ করে দিচ্ছি। যথা-

(১) ইউটিউবে নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে।

(২) নিজে ভিডিও তৈরি করতে হবে। কপিরাইট ভিডিও আপলোড করা যাবে না।

(৩) নিয়মিত চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করতে হবে। নিয়মিত বলতে ৩-৪ দিন পরপর একটা করে ভিডিও আপলোড করলে ভালো হয়।

ইউটিউব থেকে আয় করার মাধ্যম

ইউটিউব থেকে আয় করার সেরা অন্যতম মাধ্যম হলো গুগল এডসেন্স। আমি আমার ইউটিউব চ্যানেলে গুগল এডসেন্স থেকে আয় করি। এছাড়া ও ইউটিউব থেকে ইনকাম করার আরো কিছু মাধ্যম নিচে উল্লেখ করছি। যথা-

(১) গুগল এডসেন্স

(২) স্পন্সার

(৩) এফিলিয়েট মার্কেটিং

(৪) নিজের তৈরি করা ভিডিও বিক্রয়

(৫) পেইড কোর্স তৈরি করে বিক্রয়

(৬) বিভিন্ন ব্র্যান্ড প্রমোশন

(৭) বিভিন্ন প্রডাক্ট রিভিউ

ইউটিউব থেকে অনলাইনে আয় করার জন্য আপনাকে কিছু শর্ত অবশ্যয় মানতে হবে। তার মধ্যে প্রধান শর্ত হলো কোনো ভাবে কোনো কিছু কপি করা যাবে না। তাছাড়া চ্যানেলে গুগল এডসেন্স পেতে হলে অবশ্যয় ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার (SUBSCRIBE) এবং ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম পূর্ন করে হবে। তাহালে আপনি গুগলের কাছে এডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

(৩) এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়

এফিলিয়েট মার্কেটিং করা মানে হলো আপনার ওয়েবসাইট থেকে অন্য কোনো প্রোডাক্ট বিক্রয় করা। আর ঔ বিক্রয় প্রোডাক্ট থেকে নিদিষ্ট পরিমানে একটা কমিশন জেনারেট করা। এটাকে আপনি অনেকটা ই-কমার্স এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং এরই সমান মনে করতে পারেন। তবে, হা ই-কমার্স এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে।

এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে হলে কি কি দরকার

আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনলাইনে টাকা আয় করতে চান তাহালে আপনাকে বেশ কিছু জিনিসের দরকার হবে। আমি নিচে সেই সমস্ত জিনিস গুলো উল্লেখ করছি। যথা-

(১) আপনার একটি স্মার্টমোবাইল ফোন বা একটি কম্পিউটার / ল্যাপটপ দরকার হবে।

(২) ইন্টারনেট কানেকশন

(৩) একটি ওয়েবসাইট হলে ভালো হয়। না থাকলে সোশ্যাল মিডিয়া হলে হবে। যেমন- ফেসবুক, টুইটার, ইন্সগ্রাম ইত্যাদি।

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ হলো বিভিন্ন কোম্পানি থেকে তাদের প্রোডাক্ট নিয়ে সেখান থেকে এফিলিয়েট প্রোগ্রামে রেজিস্ট্রেশন করে আপনার নিজের ওয়েবসাইটে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করে সেই প্রোডাক্টটিকে বিক্রয় করতে হবে। প্রোডাক্ট বিক্রয় হওয়া পর লাভের অংশ থেকে আপনি নিদিষ্ট একটি অংশ পাবেন। এখানে আপনি যত প্রোডাক্ট বিক্রয় করতে পারবেন ততো আপনি আয় করতে পারবেন।

(৪) ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করুন

ছাএ ছাএীদের অনলাইনে আয় করার জন্য খুব জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো ফ্রিল্যান্সিং করা। আমাদের দেশে সহ বিশ্বের সকল দেশের যুব সমাজ ফ্রিল্যান্সিং পেশাকে খু্ব ভালোবাসে। কারণ এটা সম্পূর্ণ একটি ফ্রি পেশা। ফ্রিল্যান্সিং করে আপনি ও ভালো পরিমানে আয় করতে পারবেন প্রতিমাসে। আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সিং হতে তাহালে আপনাকে কাজের বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আপনি যত বেশি দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন ততো বেশি মার্কেটপ্লেসে কাজ পাবেন।

ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে কি কি কাজ করতে হয়

আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করে ঘরে বসে অনলাইনে আয় করতে চান তাহালে যে কোনো একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আগে নিজের কাজে দক্ষতা অর্জন করে তারপরে আপনাকে কাজ করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে যেতে হবে। মনে রাখবেন আপনি যদি ভালো দক্ষ না হন তাহালে কিন্ত ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে টিকে থাকতে পারবেন না। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য অনেক ধরনের কাজ রয়েছে। আপনি সেখান থেকে যে কোনো একটি কাজ করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং কাজের বিষয় সমূহ

  • (১) গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • (২) লোগো ডিজাইন
  • (৩) ওয়েব ডিজাইন
  • (৪) ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
  • (৫) অ্যাপ ডিজাইন
  • (৬) অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
  • (৭) আর্টিকেল রাইটিং
  • (৮) ফটো এডিটিং
  • (৯) ট্রানসলেশন
  • (১০) SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন)

(১১) প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ

এই সকল কাজ গুলো থেকে যে কোনো একটি কাজে আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। ফ্রিল্যান্সার হতে হলো প্রথমে আপনাকে অনেক কষ্ট করতে হবে। মনে রাখবেন কারও কিন্ত প্রথমে দক্ষ হয় না। কাজ করতে করতে কিন্ত সবাই দক্ষ হয়ে উঠে। আপনি যদি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে চান তাহালে সম্পূর্ণ ফ্রিতে আমাদের ইউটিউব চ্যানেল থেকে শিখতে পারেন। 

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য বর্তমানে অনলাইনে মার্কেটপ্লেসের অভাব নেই। প্রচুর পরিমানে মার্কেটপ্লেসে রয়েছে অনলাইনে। আপনি চাইলে যেকোনো একটি মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে পারবেন। তবে সকল ফ্রিল্যান্সারা চাই তিনি জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেসে করতে। আমি নিজে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য জনপ্রিয় কয়েকটি মার্কেটপ্লেসের নাম নিচে উল্লেখ করছি। যথা-

(১) Freelancer.con

(২) Upwork | Hire Freelancers. Make things happen.

(৩) Access to This Page Has Been Blocked

(৪) Guru - Hire Freelancers Online and Find Freelance Jobs Online

(৫) 99design.com

(৬) http://Peopleperhour.com


(৫) ওয়েবসাইট ফ্লিপিং করে টাকা আয়

ওয়েবসাইট ফ্লিপিং করে টাকা আয় করাটা একটু হলে ও কষ্টকার কাজ। এবং এই কাজে আপনি যেমন মোটা অংকের টাকা পাবেন ঠিক সেই রকমের সময় ও প্রয়োজন হবে। আমি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে আর্টিকেল লিখে পাবলিশ করবেন। ধীরে ধীরে যখন আপনার ওয়েবসাইটে যখন ভিজিটর্সরা আসা শুরু করতে তখন আপনার সাইটটির মূল্য অনেক বেশি পরিমানে হয়ে যাবে। আর ঠিক তখন আপনি ওয়েবসাইটি ফ্লিপিং মানে বিক্রয় করে দিতে পারবেন। এই রকমের ওয়েবসাইটের মূল্য পাবেন আপনি ১০ থেকে ১২ গুন।

বর্তমানে ওয়েবসাইট ফ্লিপিং করার জন্য জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হল https://www.flippa.com এই সাইটে গিয়ে আপনারা প্রচুর মূলে নিজের তৈরি ওয়েবসাইট ফ্লিপিং করতে পারবেন। তবে হা আপনি যদি এই ওয়েবসাইট ফ্লিপিং এর কাজ করতে চান তাহালে আপনাকে দক্ষ হতে হবে কয়েকটি কাজে। যেমন- SEO, ওয়েব ডিজাইন, আর্টিকেল রাইটার ইত্যাদি।

Post a Comment

Previous Post Next Post